মানবতাবাদী কবিতা
মানবতাবাদী কবিতা
এস এম জাছিম
উপোসে কাদি, নির্বিকার নিরবধি জল আসে না চোখে, জানি এ শহর, বড়োই স্বার্থপর পর-ও অশ্রুজল কে দেখে?
বিশাল এ ভুবন, বিশাল ও কৃপণ,
অসহায়ের ঠাঁই ফিকে,
বাবুসাহেবদের ঘর, কতগুলো অবসর
বারান্দায় লুকিয়ে ঘুমাই দেখলে হাঁকে!
নেই কোন হুঁশ, চিনে না মানুষ, শহরীয়’র মগজ বরবাদ, ভুক্তাবশেষ, মোরে দিলে বেশ! কুকুর খায় পায় মাংসের ও স্বাদ
এ শহরে হায়, বধির স্বীকৃতি পায়,
এমন বিত্তবানের জাত;
আছে দুই ‘কান’, শুনে সুখের গান
শুনে না অসহায়দের আর্তনাদ!
মানবতাবাদী কবিতা
ভালোবাসা মানে কি? ভালোবাসা কাকে বলে?
ভালোবাসা মানে কি? একজন পুরুষ একটি মেয়েকে ভালবাসে। সে একাই তাহাকে পরিপূর্ণ ভাবে ভোগ করিতে চায়; তাহার প্রতিটি গতিবিধি সম্বন্ধে পুরুষটির মনে ঈর্ষার উদয় হয়। সে চায়-মেয়েটি তাহার কাছে বসুক, তাহার কাছে দাঁড়াক, তাহার ইঙ্গিতে খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা প্রভৃতি সব কাজ করুক। সে ঐ মেয়েটির ক্রীতদাস, এবং মেয়েটিকেও নিজের দাসী করিয়া রাখিতে চায়। ইহা ভালবাসা নয়, ইহা একপ্রকার দাসসুলভ অনুরাগের বিকার। ভালবাসার মতো দেখাইতেছে, বস্তুতঃ ইহা ভালবাসা নয়। উহা ভালবাসা হইতে পারে না, কারণ উহা যন্ত্রণাদায়ক। যদি মেয়েটি তাহার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ না করে, তবে তাহার কষ্ট হইবে। ভালবাসায় কোন দুখঃকর প্রতিক্রিয়া নাই। ভালবাসার প্রতিক্রিয়ায় কেবল আনন্দই হইয়া থাকে। ভালবাসিয়া যদি আনন্দ না হয়, তবে উহা ভালবাসা নয়; অন্য কিছুকে আমরা ভালবাসা বলিয়া ভুল করিতেছি। যখন তুমি তোমার স্বামীকে, স্ত্রীকে,পুত্রকন্যাকে, সমুদয় পৃথিবীকে, বিশ্বজগৎকে এমনভাবে ভালবাসিতে সমর্থ হইবে যে, তাহাতে কোনরূপ দুঃখ ঈর্ষা বা স্বার্থপরতার প্রতিক্রিয়া হইবে না, তখনই তুমি প্রকৃতপক্ষে অনাসক্ত হইতে পারিবে। স্বামী বিবেকানন্দ। ভালোবাসা মানে কি?
হাতের রেখা দেখে ভাগ্য গণনা। শরীরে সুখ দুঃখ এর লক্ষণ বা চিহ্ন।
পুরুষ ও নারীদের শরীরে সুখ দুঃখ এর লক্ষণ বা চিহ্ন।
হাতের রেখা দেখে ভাগ্য গণনাঃ পুরুষ জাতীর বিভিন্ন লক্ষণ ও চিহ্ন বর্ণনা।
নারীর লক্ষণ-অলক্ষণের বিচার যেমন করা হলাে, তেমনি আবার পুরুষ জাতীর শরীরেও এমন সব চিহ্ন আছে যা দেখে তাদের সুখ বা দুঃখ কিংবা তাদের ভাগ্য কেমন হবে—তাদের জীবনে উন্নতি সম্ভব হবে না অবনতি ঘটবে তা বলা যায়। অনেকে আজকাল হয়ত এ সব চিহ্নে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু ধীরে ধীরে জীবনে বাস্তব অভিজ্ঞতা ঘটতে থাকলে তারা এ সব বিশ্বাস করতে বাধ্য হন। পুরুষ বা নারীর হয়ত বিরাট উচ্চকুলে জন্ম—কিন্তু তারা তাদের দেহের বিভিন্ন লক্ষণ অনুযায়ী ভাগ্য লাভ করে। তাই লক্ষপতির ঘরে জন্ম নিলেও কত লােক – যারা নানান ধরনের কুলক্ষণযুক্ত—তারা ধীরে ধীরে সমস্ত অর্থ নিঃশেষ করে জীবনে অশেষ কষ্ট পায়।।
আবার হয়ত কোন লােক খুব গরীব বা মধ্যবিত্ত ঘরে তার জন্ম, সে নিজের চেষ্টায়, উদ্যমে, ভাগ্যে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে ধনে, মানে, প্রতিষ্ঠায় সমাজে শ্রেষ্ঠ লােক বলে নিজেদের পরিচয় দিতে পারে। তাই কোন লােক তার মেয়ের বিবাহাদির জন্য যদি পাত্র খুঁজতে যায়, তবে শুধু বংশ বা চেহারা দেখে বিচার করলেই হবে না, পুরুষ জাতির নানা কুচিহ্ন তার দেহে বর্তমান কিনা তা দেখা একান্ত আবশ্যক। আমরা জানি, স্বদেশে ও বিদেশে এমন হাজার হাজার লােক ছিলেন যারা নিতান্ত গরীব হয়েও জগতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হয়েছেন।
সেক্সপীয়র ছিলেন ঘােড়ার গাড়ির কোচম্যান, ষ্ট্যালিন ছিলেন কামারের ছেলে, হিটলার মুচির ছেলে, মোপাসা পতিতার পুত্র। আমাদের দেশেও শরৎচন্দ্র, আলামােহন দাস, স্যার জেমসেদজী টাটা, কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রভৃতি অজস্র মনীষী ও শ্রেষ্ঠ ধনী নিতান্ত গরীবের ঘরে জন্মেছিলেন
তাই ভাগ্য বা সুখ সৌভাগ্যের পরিবর্তনে মানুষের বিশ্বাসী হওয়া অবশ্যই উচিত। আমাদের শাস্ত্রে আরও আছে—
স্ত্রীয়াশ্চরিত্রং পুরুষ ভাগ্যং।
দেবাঃ ন জানন্তি কুততা মনুষ্যাঃ ।।
কোন পুরুষের ভাগ্যে যে কি আছে, তা দেবতারা পর্যন্ত জানতে বা বলতে পারেন না। তাই সুখ-দুঃখ-সৌভাগ্য ইত্যাদির চিহ্ন যে অনেকটা এ বিষয়ে পূর্বাহ্নে শুভ সূচনা করে সে কথা অবশ্য স্বীকার্য।
মহাদেব অতঃপর পুরুষজাতির ভাগ্য ও সুখ-দুঃখের যে বর্ণনা দিলেন তা একে একে বলা হচ্ছে।
যে লােকের কণ্ঠস্বর, বুদ্ধি ও নাভি গভীর হয় তাকে সুখী ও সুলক্ষণযুক্ত বলে জানবে। অর্থাৎ সে লােকের গলার স্বর বেশ ভারী হয়, বুদ্ধি বেশ ধীরস্থির এবং বেশ ভালভাবে অগ্র-পশ্চাৎ না ভেবে সে কোনও কাজ করে না, আর তার নাভির গর্ত বেশ গভীর থাকে ।। এ ছাড়া যার বুক, শির ও ললাট (কপাল) প্রশস্ত, সেও লক্ষ্মীবান পুরুষ বলে বর্ণিত হয়েছে।
স্বরে বুদ্ধিশ্চ নাভিশ্চ ত্রিগম্ভীরমুদাহৃতম।
এব যস্য বিস্তীর্ণং তস্য শ্ৰীঃ সব্বততামুখী।
উরঃ শিরাে ললাটঞ্চ ত্রিবিস্তীর্ণং প্রশস্ততে।
তারপর অন্য আর ও কতক গুলি লক্ষণ বর্ণনা করা হয়েছে।
যে পুরুষের কটিদেশ বিশাল (বেশ চওড়া যার কোমর ও নিতম্ব), সে বহু পুত্র লাভ করে থাকে যে পুরুষের বাহু সুদীর্ঘ ( অনেক সময় আজানুলম্বিত বাহু বলে শ্রেষ্ঠ পুরুষদের বর্ণনা করা হয় ), সে নরশ্রেষ্ঠ ও সুখ সম্পন্ন হয়ে পরম শান্তি ও আনন্দে দিন কাটাতে পারে। যে পুরুষের বক্ষদেশ বিশাল—অর্থাৎ যার বুক বেশ চওড়া ধরনের সে পুরুষ ধনধান্যযুক্ত হন। সাংসারিক সর্ববিষয়ে তার ভাগ্য ভাল দেখা যায়।। যে পুরুষের শিরােদেশ বিশাল ( অর্থাৎ মাথা যার বড় ), সে নরলােকে সর্বত্র পূজা পায়। এই পুরুষরা সর্বত্র সুমেধা ও নিজ কীর্তির মহত্বের জন্যে সকলের কাছে পূজনীয় হয় এবং সকলেই তাদের গুণের জন্য তাদের শ্রদ্ধা ভক্তি করেন।
কটিবিশাল বহুপুত্ৰভাগী।
বিশালহন্তো নর-পুঙ্গবঃ স্যাৎ।
উরে বিশালং ধনধান্যভােগী
শিরে বিশালং নরপূজিতঃ স্যাৎ৷৷
অতঃপরে আরও কতকগুলি পুরুষজাতির লক্ষণ বর্ণনা করা হচ্ছে। এগুলি সব সুচিহ্ন।
যে পুরুষ বিশেষ কঠিন কাজকর্ম করে না, অথচ তার হাতদুটি হয় শক্ত ও কঠোর, অনেক পথ চলেও যার পা দুটি থাকে কোমল, আর যে পুরুষের করতল রক্তবর্ণ অর্থাৎ লালচে রঙের হয়, সেই পুরুষ যে সুখী হবে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
অকৰ্ম্ম কঠিনৌ হস্তৌ পদাবন্ধনি কোমলো।
যস্য পাণিতলৌ রক্তৌ স সুখী নাত্ৰ সংশয়ঃ ।
যে পুরুষের শিক্ষাগ্র অর্থাৎ লিঙ্গের অগ্রভাগ স্থুল হয় সে সুখী হয়। যে পরুষের শিশ্ন দীর্ঘ বা অনেক বেশী লম্বা সে দুঃখ পায়, যে পুরুষের শিশ্ন চোট কিন্তু কৃশ হয় সে সৌভাগ্য লাভ করে থাকে।
সুলশিশ্নঃ সুখী চৈব দীর্ঘাশিশ্নশ্চ দুঃখিত।
কৃশশিশ্নশ্চ সৌভাগ্যলক্ষণং নাত্ৰ সংশয়ঃ ৷৷
যে পুরুষের নেত্র (চোখদুটি ) স্নিগ্ধ—অর্থাৎ যার দুটি চোখের দৃষ্টি কোমল ও সুন্দর, সে সুখ ও সৌভাগ্যশালী হয়ে থাকে। যে পুরুষের দন্ত স্নিগ্ধ অর্থাৎ চক্চকে ও সুন্দরভাবে সাজান সে উত্তম ভােজন করে থাকে। যে পুরুষের হস্ত স্নিগ্ধ অর্থাৎ যার হাত সুঠাম ও সুদৃশ্য হয় সে ঐশ্বৰ্য্যাশালী হয়ে থাকে । যে পুরুষের পদদ্বয় স্নিগ্ধ অর্থাৎ যার দুটি পা সুঠাম, কোমল ও সুদর্শন, দে। নানা যানবাহনের অধিকারী হয়ে থাকে।
সৌভাগ্যং লভতে নূনং নেত্রসেহ-সমাম্বিতঃ।।
উত্তমং ভােজনং চৈব দম্ভ-স্নেহ-যুত হি।।
হস্তস্নেহেন চৈশ্বৰ্য্যং পাদস্নেহেন বাহনম ৷৷
এবারে সবচেয়ে সুখ ঐশ্বৰ্য্য ও সম্পদযুক্ত পুরুষের একটি বিশেষ লক্ষণ এখানে বলা হচ্ছে। ও ঐশ্বৰ্য একাধারে কেউ উপভােগ বলা হচ্ছে। দুটি ব্রুর মধ্যে কপালে যদি কোনও পুরুষের রক্তবর্ণ অর্থাৎ লাল রঙের রেখা থাকে, তবে সে সব ঐশ্বর্যযুক্ত ও অতুলনীয় সুখের অধিকারী হয়ে থাকে। পৃথিবীর মধ্যে তেমন পুরুষের মত সুখ ও ঐশ্বৰ্য একাধারে কেউ করতে পারে না। এই চিহ্ন অত্যন্ত সুলক্ষণযুক্ত। কিন্তু এখানে একটা কথা অবশ্যই মনে রাখতে হবে। এ রেখাটি সম্পূর্ণ নিচের থেকে ওপর পর্যন্ত আগাগােড়া হবে।। আগাগােড়া লালবর্ণ হতে হবে। যদি তা না হয়ে এই রেখার উপরের দিকের কিছুটা অংশ নীলবর্ণ হয় বা নীল আভা বের হয়, তাহলে সে পরুষ জীবনে কখনও সুখলাভ করে না।।
বাের্মধ্যে চ যা রেখ। রক্তবর্ণ ভাবেদঘদি।
সবৈ শ্বৰ্য্য সম যুক্তঃ স সুখী নাজ সংশয়ঃ ।।
তস্যাদ্ধে যদি রেখা স্যাৎ নীলবর্ণ। চ দীর্ঘিকা।
ন সুখং লভতে কাপি ইতি শাস্ত্রবিনির্ণয়ঃ ।
মহাদেব অতঃপর রতিশাস্ত্রে সুখদুঃখের আরও নানা চিহ্ন একে একে বর্ণনা করে চললেন।
যদি কোন পুরুষের নাকের অগ্রভাগে বতুলাকার (বােতলের মত গােল ) চিহ্ন থাকে এবং সেই চিহ্ন যদি কিছু শুরু অর্থাৎ সাদা রঙের আভাযুক্ত হয় তাহলে সেই পুরুষ যতদিন বেঁচে থাকে ততদিন পরম সুখে দিন যাপন করে। জীবনে কখনও কোনও অভাব বা অশান্তি এসে তাদের ক্লেশ দিতে পারে না। যে লােকের কপালে শুক্ল রেখা অর্থাৎ সাদা রঙের রেখা দেখা যায় সেই পুরুষ আজীবন পরম সুখে দিন কাটায়—জীবনে কখনও কষ্ট পায় না। কামশাস্ত্রে এইসব সুখলক্ষণগুলি যা লেখা আছে তা কখনও মিথ্য হয় না।
বা লাকার চিহ্নঞ্চ নাসাগ্রে যদি দৃশ্যতে।।
কিঞ্চিৎ শুক্লঞ্চ তচিহ্নগ্ধ সুখী নাত্ৰ সংশয়ঃ ।।
ললাটে যদি জায়তে শুক্লরেখা নরস্য চ।।
সুখিনং তং বিজানীয়াৎ কথিতং কামশাস্ত্রিণা।
এতক্ষণ ধরে মহাদেব পুরুষের সুখ, সৌভাগ্যের কতকগুলি রেখা বর্ণনা করলেন। এবারে তিনি এমন কতকগুলি চিহ্ন বর্ণনা করলেন, যা থাকলে মানুষ জীবনভাের দুঃখভােগ করে থাকে। যে পুরুষের চোখের উপর অর্থাৎ চোখের উপরের পাতার উপরিভাগে গৌরবর্ণ রেখা দেখা যায়, নিঃসংশয়ে সে পুরুষ আজীবন দুঃখভােগ করবে। যে পুরুষের নাসামূলে অর্থাৎ গােড়ার দিকে পীতবর্ণ অর্থাৎ হলদে রঙের চিহ্ন দেখা যায়, সে আজীবন দুঃখভােগ করে এতে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই।
গৌররূপা চ যা রেখা যদি স্যাৎ নেত্রসংস্থিতা।
দুঃখভােগী ভবেচ্চৈব নাত্ৰ কাৰ্য্যা বিচারণা।
নাসামুলে চ যৎ চিহ্নং দৃশ্যতে পীতবর্ণকম।
তঞ্চ দুঃখস্য মূলং স্যাৎ নাত্ৰ কাৰ্য্যা বিচারণা।
এ ছাড়া যদি কোন পুরুষের অধরে অর্থাৎ ঠোটে অরুণবর্ণ অর্থাৎ টকটকে লাল চিহ্ন থাকে, তবে তার সারা জীবন দুঃখের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়ে থাকে। যদি কোনও পুরুষের অঙ্কুষ্ঠের মুলদেশে কৃষ্ণবর্ণ রেখা দেখা যায় তাহলে সেই পুরুষ যতদিন জীবিত থাকে, দুঃখে শােকে তার কাল অতিবাহিত হয়ে থাকে। যদি কোনও পুরুষের করতলে মৎস্যপুচ্ছের চিহ্ন থাকে— সেই চিহ্ন সুখ ও ধর্মময় জীবনের লক্ষণ। কিন্তু সেই মৎস্যপুচ্ছের নিম্নভাগে বার্তুলাকার ধূম্রবর্ণ চিহ্ন থাকলে সেটি খুব খারাপ। যতদিন সে বেঁচে থাকে খুব দুঃখে তার দিন অতিবাহিত হয়।
যদি স্যাদারুণং বর্ণং চিহ্নং কস্যাপি চাধরে।
তদা তস্য বিজানীয়াৎ জীবনং দুঃখমূলকম ।
অষ্ঠমূলমধ্যে যা বেখ। স্যাৎ কৃষ্ণবণিকা।।
দুঃখমূলং হি তস্য স্যাৎ জীবনং নাত্ৰ সংশয়ঃ ।।
মীনপুচ্ছসমীপে চ যস্য চিহ্নং ব্ৰজত থঃ।।
বক্ৰাকৃতিঃ ধূম্রবর্ণং দুঃখেন তস্য জীবনম।
যদি কোন পুরুষের তর্জনীর অগ্রভাগে অর্থাৎ তর্জনীর আগায় গােলাকার চিহ্ন দেখা যায় তাহলে সে কখনাে সুখে কখনও বা সুখে দিনযাপন করে। তার জীবন মধ্যম ধরনের হয়।
মাসিক।প্রথম ঋতুস্রাব কোন তিতিতে হলে কি হয়?
প্রথম ঋতুস্রাব বৃহৎ রতিশাস্ত্র থেকে আলোচনা।
গিরিরাজনন্দিনী পার্বতী ধৈর্যসহকারে মহাদেবের কাছ থেকে সমস্ত শাস্ত্রবচন শুনলেন।
তার মন আনন্দে ভরে উঠল।
মহাদেবের মত জ্ঞানী যে সারা বিশ্বে দুর্লভ তা তিনি তার মুখ থেকে সমস্ত শাস্ত্রবচন শুনে স্পষ্টই বুঝতে পারলেন।
তিনি তখন অত্যন্ত বিনয় বচনে ধীরে ধীরে মহাদেবকে বললেন-হে দেব! আপনার মুখে সমস্ত শাস্ত্রবচন শুনলাম। আপনার পায়ে আমার ভক্তিপূর্ণ নমস্কার।
এখন আপনার নিকট আমি যা জানতে চাই, আশা করি তা আমার কাছে বর্ণনা করে আমার মনের কৌতূহল নিবৃত্ত করতে নিশ্চয়ই সচেষ্ট হবেন।
নারীজাতির ঋতুলক্ষণের বিষয় শোনবার জন্যে আমার একান্ত কৌতুহল হয়েছে। অর্থাৎ নারীজাতি যখন প্রথম রজঃস্বলা (প্রথম ঋতুস্রাব) হয় তার তিথি, মাস, নক্ষত্র, বার প্রভৃতি দোষ-গুণে কিরূপ ফল পায় তা কৃপা করে আমাকে বলুন।
এতং ত্বয়েরিতং সব্বং নমস্তেহস্তু নমােনমঃ।।
আধুনা ক্ৰহি মে দেব নারীণাং ঋতুলক্ষণং ।
দেবীর কথায় মহাদেব সন্তুষ্ট হলেন।
তিনি বললেন –হে দেবি ! এবারে আমি নারীদের ঋতুলক্ষণগুলি একে একে বর্ণনা করছি, তুমি তা শ্রবণ কর এগুলি শুনলে রতিশাস্ত্রে বিশেষ জ্ঞানলাভ হয়ে থাকে ।
সবার আগে তিথিফল অর্থাৎ কোন্ তিথিতে আদ্যঋতু হলে কিরূপ ফল হয় সে বিষয়ে বলতে উদ্যত হয়েছি। তুমি নিবিষ্ট মনে আমার বাক্য শ্রবণ কর।
শূণু দেবি প্রবক্ষ্যামি নারীণাং ঋতুলক্ষণং।।
যচ্ছা জায়তে জ্ঞানং রতিশাস্ত্রে মহেশ্বরি।
তাদৌ তু প্রবক্ষামি তিথিনাং ফলমুত্তমং ।
শৃণুকৈমনা ভূত্বা রতিশাস্ত্রোদিতং যথা।।
আদখা হয় তিথিল মহাদেব বললেন-হে দেবি !
এখন প্রথম ঋতুস্রাব (আদ্যঋতুর) তিথিফল শােন।
প্রথমা অর্থাৎ প্রতিপদ তিথিতে যে নারীর ঋতুপদ্ম বিকশিত হয়, যে নারী শমনভবনে যায় অর্থাৎ অল্পদিনে তার মৃত্যু হয়, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই।
হে প্রিয়ে! যদি দ্বিতীয়া তিথিতে কোন নারী প্রথম ঋতুস্রাব হয়, তাহলে সেই নারীর স্মৃতিশক্তির তীক্ষ্ণতা কমে যায়, এই নির্দেশ দিয়ে থাকেন শাস্ত্রবিদ পণ্ডিতেরা।
হে মহেশ্বরি! তৃতীয়া তিথিতে যদি নারীজাতির কমল বিকাশপ্রাপ্ত হয় তাহলে তার ঋতু বিফল হয়ে যায়। তাতে কোন সন্তান জন্ম হয় না।।
হে প্রিয়ে! তার পরবতী ঋতুদর্শনের বর্ণনা শােন। চতুর্থী তিথিতে কোন নারী যদি প্রথম ঋতুদর্শন করে, তা হলে সে বন্ধ্যা হয়ে থাকে।
যদি পঞ্চমী তিথিতে কোন নারী ঋতুদর্শন করে, তা হলে সে অল্পদিনের মধ্যে মারা যায়। এ কথা শাস্ত্রের বচন।
ষষ্ঠী তিথিতে যদি কোন নারী আদ্যঋতু দর্শন করে তবে তার অবস্থা প্রথমার মত হয়, অর্থাৎ সেও অল্পদিনের মধ্যে মারা যায়। এ কথা নিশ্চিত সত্য।।
সপ্তমী তিথিতে কোন নারী আদ্যঋতু দর্শন করলে সে হয় কাকবন্ধ্যা, আর অষ্টমী তিথিতে আদ্যঋতু যদি নারীর হয়, সে হয় নাগিনীস্বরূপা অর্থাৎ মন হয় হিংসুটে ও বিদ্বেষভাবাপন্ন।
হে দেবি, যে নারী নবম তিথিতে প্রথম ঋতুদর্শন করে, তাকে নারী জাতির মধ্যে উৎকৃষ্টা বলে জানা যায়। সে নারী সুসন্তানের জননী হয়।
কিন্তু দশমী তিথিতে আদ্যঋতু দর্শন করলে সেই নারী হয় রাক্ষসী স্বরূপ অর্থাৎ রাক্ষসীর মত ভয়াবহ। এটি যে নিভূল কথা, তা শাস্ত্রকারগণ স্বীকার করেছেন।
একাদশী তিথিতে কোনও নারী যদি প্রথম ঋতুস্রাব দর্শন করে তবে তাকে ডাকিনী বলে জ্ঞান করবে। এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।
দ্বাদশী তিথিতে যে কন্যা ঋতুমতী হয় তাকে যোগিনী বলে জ্ঞান করতে হবে।
ত্রয়ােদশী তিথিতে যে নারী আদ্যঋতু দর্শন করে, সে খুবই পতিব্রতা ও পতিভক্তিপরায়ণা। সে আদর্শ গৃহিণী হয়, এটি শাস্ত্রের কথা।
চতুর্দশী তিথিতে যদি কোনও নারী আঋতু দর্শন করে তবে সে লক্ষ্মীভ্রষ্টা হয় অর্থাৎ তার ধন-দৌলত নষ্ট হয়।।
পূর্ণিমা তিথিতে যদি কোনও নারী ঋতুমতী হয়, তাকে দেবীরূপিণী অর্থাৎ সাক্ষাৎ মা লক্ষ্মী বলে জ্ঞান করবে।
আর যদি অমাবস্যা তিথিতে কোনও নারী ঋতুমতী হয় তবে সে জরা রোগ ইত্যাদিতে ভুগে থাকে।
এগুলি শাস্ত্রোক্ত ভাষায়
বিসতি যদা পদ্মং প্রথমায়াং মহেশ্বরি।
অচিরাৎ মিয়তে সৈব নাত্ৰ কাৰ্যা বিচারণা ।
দ্বিতীয়ায়াং ভবেন্নারী যদি রজস্বলা প্রিয়ে।।
স্মৃতেলে পা ভবেশ্চৈব ইতি শাস্ত্রবিদাং মতং ।
বিসতি যদা পদ্মং তৃতীয়ায়াং মহেশ্বরি।
ঋতুব্যথা ভবেন্নারী শৃণু-তৎপরতাে যথা।
পঞ্চমাং মিয়তে নারী চতুর্থী বন্ধকী তথা।
ষষ্ঠ্যাং বিসতি পদ্মং পঞ্চমী ফলমায়া ৷৷
সপ্তম্যাং কাকবন্ধ্যা ত অষ্টম্যাং নাগিনী ভবেৎ।
মানবজাতিয়াং বিদ্যাং নবম্যাং দেবী সত্তমে।
বিসতি যদা পদ্মং দশম্যাং পক্ষয়ােদ্দয়েন।
রাক্ষসী সা ভবেন্নারী গীয়তে তু মনীষিভিঃ।
একাদশাস্তিথৌ নারী যদি রজোবতী ভবেৎ।
ডাকিনী তাং বিজানীয়াৎ নাত্ৰ কাৰ্য্যা বিচারণা।
দ্বাদশ্যাং যােগিনী চৈব যদি কন্যা রজস্বলা।
পতিব্রতা ভবেশ্চৈব ত্রয়ােদশাং মহেশ্বরি ।
লক্ষ্মীহীনা চতুর্দশাং কীৰ্ত্তিতং বিবুধৈরিতি ।
পূর্ণিমায়াং ভবেন্নারী দেবী সা লক্ষ্মীরূপিণী ।
অমবস্যাস্তিথৌ নারী যদি রজস্বলা ভবেৎ।
জরাব্যাধি সমাকীর্ণা নাত্ৰ কাৰ্য্যা বিচারণা।
সূত্রঃ বৃহৎ রতিশাস্ত্র
ঘুম আসার সহজ উপায়-ঘুমের সমস্যা-ঘুম না আসার কারন। ঘুমানোর দোয়া
ঘুম আসার সহজ উপায়: ঘুম প্রকৃতির এক অনন্য দান এবং অমূল্য সম্পদ। যার সঠিকভাবে ঘুম হয়না সেই এই অমূল্য সম্পদের মূল্য বুঝতে পারে । ঘুম ছাড়া না হলে মানুষ পাগল প্রায় হয়ে পড়ে। বৈবৈজ্ঞানিক গবেষণা দ্বারা পরিষ্কার ভাবে বুঝা যায় যে ঘুম সব বয়সেই জরুরী । ঘুম মনকে সতেজ করে তোলে, দেহের কার্যত প্রতিটি সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, দেহকে পুনর্গঠন করে। কিন্তু উপরুক্ত সুবিধাগুলি পেতে কতটুকু ঘুম আমাদের দরকার?
ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন নির্দেশিকাঃ
স্লিপ ফাউন্ডেশন এক পরামর্শ বার্তায় বলে যে প্রাপ্তবয়স্ক স্বাস্থ্যবানদের প্রতি রাতে 7 থেকে 9 ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। বাচ্চা, ছোট বাচ্চাদের এবং কিশোরদের আরও বেশি ঘুম দরকার তাদের বৃদ্ধি এবং বিকাশ সক্ষম করতে করার জন্য। ৭ থেকে ৮ ঘন্টা সময় 65 বছরের বেশি বয়সীদেরও প্রতি রাতে ঘুম দরকার।
ঘুম প্রকৃতির সৃষ্টি। ঘুম না হলে পৃথিবীর যে কেউ তার স্বাভাবিক জীবন চালিয়ে যেতে পারে না। ঘুম বাঁচার অংশ আপনি যদি প্রতি রাতে প্রায় না ঘুমিয়ে থাকেন তবে সকালে চোখ খোলার পরে আপনি ক্লান্ত বোধ করবেন। সারা দিন শরীর ঝিমঝিম করবে। এবং দ্রুত ওজন বৃদ্ধির এটি একটি বড় কারণ। অনেকে একে অনিদ্রা বলে থাকেন। আসলে আমরা যদি ঠিক মতো না ঘুমাই তবে আমরা একে অনিদ্রা বলি। লাতিন শব্দ ‘সোনিয়া’ এর অর্থ ‘ঘুম’। এবং ‘ইন’ এর অর্থ ‘না’। ‘অনিদ্রা’ শব্দটি এই দুটি থেকেই এসেছে।
নীচে আমরা ঘুম আসার সহজ উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব:
১. ঘুমের রুটিন অনুসরণ করুন:
আপনার প্রয়োজন ঘুমের রুটিন। এটি গভীর ঘুমের বিকাশ করে। আজ থেকে প্রতিদিন ঘুমের জন্য সঠিক সময় নির্ধারণ করুন। প্রতি রাতে একই সময় ঘুমালে গভীর ঘুম বিকাশে সহায়তা করে।
২. ধূমপান করবেন না:
সকলেই জানেন ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। গভীর ঘুমের ক্ষেত্রেও এটি একটি বাধা। তাই ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
৩. ডায়েট পরিবর্তন করুন:
কফি, চা, কোমল পানীয় এবং চকোলেট আপনার গভীর নিদ্রা কমিয়ে দেয়। সুতরাং, এগুলি এড়িয়ে যান। মশলাদার বা ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। রাতের হালকা খাবার গ্রহন করুন। এবং আপনার শোবার কয়েক ঘন্টা আগে আপনার ডিনার শেষ করা উচিত।
৪. ডিভাইসগুলি এড়িয়ে চলুন:
এটি একটি খারাপ ধারণা। কম্পিউটার, টেলিভিশন, ভিডিও গেম বা সেল ফোনের মতো কিছু ধরণের ইলেকট্রনিক্স আমরা বিছানায় যাওয়ার আগে সর্বদা শেষ ঘন্টাটির মধ্যে ব্যবহার করি। এই ডিভাইসগুলির আলো মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে, এটিকে বায়ু করা শক্ত করে তোলে, তাই গভীর ঘুমের জন্য এই ধরণের ডিভাইসটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
৫. খুব বেশি চিন্তাভাবনা:
আমরা ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমাদের মস্তিষ্ককে প্রতিদিন হাজারো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে দিই না। এমনকি বিছানায় শুয়ে থাকার পরেও মস্তিষ্ক বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে কাজ করতে থাকে। যা ভাল ঘুমের সম্ভাবনা নষ্ট করে।
ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই প্রতিদিনের চিন্তাভাবনা থেকে নিজেকে সরিয়ে দিন। আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ গ্রহণ করে এমন অন্য কিছু করুন। উদাহরণস্বরূপ, একই নামের সাথে শুরু হওয়া দেশের নামটি মনে রাখুন বা আপনার মনে নিদ্রাকে বহুগুণ করুন।
৬. আলোর উৎস:
যে কোনও হালকা আলোর উৎস যা খুব ছোট, তা আপনার পছন্দসই ঘুমকে নষ্ট করার পক্ষে যথেষ্ট। হতে পারে এটি কোনও সুইচবোর্ড বা বৈদ্যুতিক ডিভাইস থেকে আলো। ঘুমানোর সময় সমস্ত হালকা আলোর উৎস বন্ধ করুন বা ঘুমানোর মুখোশ পরে ঘুমান।
৭. গোলমাল:
৭. ওয়ার্কআউট সেশন:
আপনার শয়নকাল আগে ওয়ার্কআউট সেশন গুটিয়ে নিন।